ঔষধ ছাড়াই ওজন ও ভুঁড়ি কমানোর সহজ উপায়



ভুঁড়ি কমানোর সহজ উপায় কি? ওহ খোদা, দিনে দিনে ভুঁড়ি বেড়ে যাচ্ছে। কোন জামা কাপড়ে এখন আর ভালো লাগছেনা। এবার-তো এই ভুঁড়ি কমাতেই হবে। সিক্স প্যাক না হোক অন্তত জামা কাপড় পরলে যেন না বোঝা যায় আপাতত এরকমই দরকার। ওয়েটলস আর হেলদি থাকা বর্তমানে আমাদের অন্যতম একটা প্রধান সমস্যা। এ সমস্যাটা আরো বেশি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের নিউট্রেশনের ব্যপারে ল্যাক অব নলেজের কারণে। ওয়েট বা  ভুঁড়ি বেড়ে গেলে প্রথমে সার্চ করি ভুঁড়ি কমানোর সহজ উপায় কি।আশ্চর্যের বিষয় কেউ কেউ অনলাইনে খোজে- ২দিনে পেটের মেদ কমানোর উপায়, ১ সপ্তাহে পেটের মেদ কমানোর উপায়, পেটের চর্বি কমানোর সহজ উপায়, দিনে দিনে মেদ কমানোর উপায়।

⚡ আকর্ষণীয় ১৫ টি হেয়ার কাট

কেউ এটা সার্চ করেনা ভুঁড়ি বাড়ার কারন কি? রোগের আসল কারন না জেনে যদি আপনি রোগ সারাতে নেমে পড়েন তাহলে তা ঝাড়ফুক টুকটাক ছাড়া আর কিছুই বলা চলেনা। তাই আজকে প্রথমে জানবো ভুড়ি বাড়ার কারণ কি কি? তারপর একিছু টিপস শেয়ার করবো যেগুলো ফলো করলে আপনির ভুড়ি আপনার নিয়ন্ত্রনে চলে আসবে। তারজন্য আপনাকে আলাদা কিছু করতে হবেনা। শুধু আগে যা করতেন এখন একটু অন্যভাবে তা করবেন।

তাহলে চলুন দেখে নেয়া যাক:

ওজন বৃদ্ধির কারণ

ওজন মেন্টাইন রাখার ক্ষেত্রে একটা সহজ সমীকরণ রয়েছে। ক্যালরিজ ইন=ক্যালরিজ আউট। আমরা প্রতিদিন যেসমস্ত খাবার খাই সেগুলো থেকে আমাদের শরীরে ক্যলরি সঞ্চয় হয় এবং আমরা রোজ যেসমস্ত এক্টিভিটিগুলো করি যেমন হাটা চলা, বসে থাকা, এমনকি, ডাইজেশন, ব্রিদিং এসমস্ত কিছু হয় ঐ সঞ্চিত ক্যালরি খরচ করে। গাড়ির যেমন পেট্রোল আমাদের তেমন ক্যালরি। এবার আমরা যদি আমাদের যতটা প্রয়োজন তার থেকে বেশি ক্যালরি খাবারের মাধ্যমে গ্রহন করতে থাকি তাহলে সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত ক্যালরি আমাদের শরীরে বেশিরভাগটা ফ্যাট হিসেবে সঞ্চিত হতে থাকে। তার ফলস্বরূপ আমাদের ওজন দিন দিন বাড়তে থাকে। একইভাবে যদি প্রয়োজনের চেয়ে কম ক্যালরি গ্রহন করি তাহলে ওজন কমতে থাকে। ওভার ওয়েট যেমন ভালোনা ঠিক তেমনি আন্ডারওয়েটও ভালো না। এতে শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগের সৃষ্টি হয়।

⚡ বিশ্বে জনপ্রিয় ১০টি কিউট বিড়াল

সঠিক ওজন বজায় রাখার আসল খেলাটা হলো ক্যালরিজ ইন= ক্যালরিজ আউট এই ব্যলেন্সটা বজায় রাখা। আমরা সাধারণত ভেবে থাকি মাঠে গিয়ে দৌড়ালে কিংবা এক্সা্রসাইজ করলে আমাদের ওজন কামে যাবে। এটা একদমই ভুল ধারনা। ওজন ৯০% নির্ভর করে আপনি কি খাচ্ছেন তার উপর। বাকী ১০ পার্সেন্ট নির্ভর করে আপনি রোজ কি এক্টিভিটি করছেন তার উপর।

এবার দেখে নেয়াযাক টিপস যা মেনে চললে আপনার ওজন কমার গ্যারান্টি রয়েছে।

ধীরে খাবার খেলে কমবে ওজন
ক্যালরী শরীরে বেশি যাওয়ার মূল কারন বেশি খাওয়া। আর বেশি খাওয়ার মূল কারণ দ্রুত খাওয়া। ছোট বেলা থেকেই আমাদের দ্রুত খাওয়ার অভ্যাসটা করানো হয়। আমি মায়ের হাতে অনেক মারও খেয়েছি স্লোলি খাওয়ার কারনে। আমরা যখন খাওয়া শুরু করি তার ঠিক বিশ মিনিট পরে আমাদে মস্তিষ্কে সিগন্যাল যায় যে পেট ভর্তি হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা বেশিরভাগই পাঁচ মিনিটে প্লেটের সমস্ত খাবার শেষ করে ফেলি। যার ফলে ওভার ইটিং হয়ে যায়। যেটা আমরা হয়তো সে মূহুর্তে টের পাইনা এবং নিজেদের অজান্তে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ক্যালরি গ্রহণ করি।

এছাড়া স্লোলি খাওয়ার আরো একাধিক উপকারিতা রয়েছে। যেমন:

  • স্লোলি খেলে সহজে ওজন কমানো যায়।
  • স্লো খাবার খেলে স্যাটিসফেকশনও পরিপূর্ন হয়। দ্রুত খাবার খাওয়ার এক ঘন্টা পরই আপনি আবার ক্ষুধার্ত অনুভব করবেন।
  • ভালো হজমের জন্য প্রয়োজন ধীরে খাওয়া। আমাদের ধারনা হজম শুরু হয় পেট থেকে। আসলে হজমের কাজ শরু হয় আমাদের মুখের মধ্য থেকে। যখনই আমরা খাবারের ঘ্রানটা নেই তখন আমাদের মুখ থেকে কিছু লালা রস নিসৃত হয়। এই লালা রসগুলোই সবার প্রথমে ডাইজেশন শুরু করে। দ্রুত খেলে খাবারের সাথে এই লালা রস মিশতে সুযোগ পায়না আবার কম চিবিয়ে খাওয়ার কারণে মুখে যে হজমের কাজটি হওয়ার কথা ছিল তা আর হয়ে উঠেনা।

 স্লো খাওয়া আর পাঁচটা অভ্যাসের মত সাধারন একটি অভ্যাস। কয়েকদিন ধরে প্র্যাকটিস করলে সহজে আপনার অভ্যাসে পরিনত হবে। যা আপনার শরীরে অসংখ্য রোগের বাসা বাধা থেকে বিরত রাখবে।

ছোট সাইজের প্লেটে খাবেন

শুনতে কি হাস্যকর শোনায়। ছোট প্লেটে খেলে কিভাবে ভুঁড়ি কমবে বা হবেনা। দ্যা জার্নাল অব এসোসিয়েশন অব কনজিউমার রিসার্চের পাবলিশ করা একটা রিসার্চ রিপোর্ট থেকে জানা গেছে প্লেটের ডায়ামিটার ৩০% কমানো হলে ফুড কনজাম্পশন ৩০% পর্যন্ত কমে যায়। তবে এক্ষেত্রে দুটি শর্ত আছে।

⚡ পোষার জন্য কিউট 10টি কুকুরের জাত দেখুন

  • নিজের খাবার নিজে সার্ভ করতে হবে।
  • কতটা খাচ্ছি তা অন্য কেউ মনিটর করছে বা আপনি নিজে মনিটর করবেন তা মাথায় রাখা যাবেনা।

অত্যান্ত সিম্পল একটা ব্যপার যার মাধ্যমে খুব সহজে ৩০% পর্যন্ত ক্যালরি গ্রহণ করা  থেকে বিরত থাকতে পারেন।  এ আাডিয়ার ব্যপারে যদি কোন সন্দেহ থাকে প্লিজ গুগল করে নিজে নিজে বুঝে নিন।

ওজন কমানোর ব্যয়াম
ওজন কমানোর জন্য ব্যয়াম খুব একটা কাজে আসেনা। ফ্যাটলস এক্সারসাইজের ‍উপর মাত্র ১০% নির্ভর করে। তারপরও ওজন কমানোর ব্যয়াম যদি করার কথা ভাবেন তাহলে খালি পেটে কার্ডিও এক্সারসাইজ করতে পারেন। প্রশ্ন হচ্ছে কার্ডিও এক্সারসাইজ কোনগুলো? কার্ডিও এক্সারসাইজ হচ্ছে এমন ধরনের ব্যয়াম যা আমাদের হার্টরেটকে বাড়িয়ে তোলে। যেমন রানিং, সুইমিং, স্কিপিং এবং সেক্স। ম্যারিড হলেতো সহজে শেষেরটা প্র্যাকটিস করতে পারবেন।বাকী ব্যচেলর হলে অন্যগুলো থেকে যেকোন একটা ট্রাই করুন।

সকালে ঘুম থেকে উঠার পর আপনি যখন কার্ডিও এক্সারসাইজ করতে শুরু করেন তখন আপনার অতিরিক্ত পরিমান এনার্জির প্রয়োজন হয়। যেহেতু পেট খালি তাই এনার্জির জন্য সরাসরি ফ্যাট ভেঙ্গে  এনার্জি নিতে থাকে। তাই ফ্যাট লসের জন্য ভরা পেটে ব্যয়ামের চাইতে খালি পেটে এক্সারসাইজ অনেক বেশি উপকারি।

⚡ ছেলেদের ২০টি কোকরা চুলের বিদেশী স্টাইল

খাওয়ার সময় পানি পান করা

খাওয়ার সময় খেতে খেতে পানি খাওয়া অত্যান্ত ক্ষতিকর অভ্যাস। খাবার হজম হওয়ার জন্য আমাদের পাকস্থলীতে যে পাঁচক রসগুলো ক্ষরিত হয় খাওয়ার সময় পানি খাওয়ার ফলে পানি সে পাঁচকরসগুলোর সাথে মিশে গিয়ে সেগুলোর ঘনত্ব কমিয়ে দেয়। যার ফলে খাবার ঠিকমতো হজম না হয়েই শরীরে শোষিত হয়ে যায়। এতে রক্তে ইনসুলিনের পরিমান বাড়িয়ে তোলে। যত বেশি ইনসুলিন তত বেশি তত বেশি ফ্যাট । এজন্য আপনাকে জানতে হবে পানি কখন খাবেন। রিসার্চ বলে খাবার অন্তত ত্রিশ মিনিট পূর্বে  এবং ত্রিশ মিনিট পর পানি পান করবেন।
 খেতে খেতে যেন পানির তৃষ্ণা না পায় তার জন্য খাবারে খুব অল্প পরিমানে লবন এবং চিনি ব্যবহার করতে হবে। লবন এবং চিনি আমাদের শরীরে ফ্যাট সরবরাহ করার অন্যতম প্রধান উৎস।
সুস্থ্য থাকার জন্য আমাদের প্রতিদিন দুই লিটার পানি পান করা প্রয়োজন।

পেট খালি রাখা উচিত নয়

উপরের  আইডিয়াগুলো দেখে আপনি ভাবছেন আমরা আপনাকে কম খেতে পরামর্শ দিচ্ছি। জি, আপনাকে কম খেতে বলা হচ্ছে। কিন্তু পেটে ক্ষুধা রেখে কম খেতে বলা হচ্ছেনা। এজন্য আপনাকে স্লো ইটিং এর কথা বলা হয়েছে। মূল উদ্দেশ্য কম খাওয়া না, মূল উদ্দেশ্য ওভার ইটিং না করা। অতিরিক্ত খাওয়ার চান্স তখনই বেশি থাকে যখন আপনি একটু বেশি ক্ষুধার্থ থাকেন।

⚡ নতুন স্টাইলে বেনি গাথা দাঁড়ি দেখুন

যখন আমরা ক্ষুধার্ত থাকি তখন আমরা ইমোশনাল ইটিং করতে শুরু করি। যার ফলে খুব তাড়াতাড়ি অনেকটা খাবার খেয়ে ফেলি। সেসময় আর স্লো ইটিং, ছোট প্লেট এগুলো কোন কাজে আসেনা। মাথার উপর দিয়ে যায়। ডাক্তার রিকমেন্ড করেন –

 প্রতি তিন ঘন্টায় কিছু না কিছু খেতে হবে। যেন আপনি দিনভর ক্ষুধার্ত  অনুভব না করেন। সকালের খাবার  সবচেয়ে বেশি দুপরে তারচেয়ে কম এবং রাতে একেবারে কম খেতে চেষ্টা করবেন।
প্রোটিন জাতীয় খাবার সবচেয়ে বেশি যেমন ডিম, মাংশ, দুধ এবং শর্করা ও ফ্যাট জাতীয় খাবার কম পরিমানে খেতে হবে। সুস্থ্য থাকার জন্য শরীরে শুধু ফ্যাট কমালে হবেনা। তার সাথে সাথে পেশী শক্তিরও প্রয়োজন পড়বে।

ঘুমিয়ে ওজন কমান

পর্যাপ্ত পরিমানে না ঘুমালে ওজন  বেড়ে যায়। কম ঘুমের কারণে শরীরে মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে যা অতিরিক্ত ওজন বাড়তে সহায়তা করে। তাছাড়া প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পর্যন্ত হাটুন।

আশা করছি পোষ্টটি ভালো লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে পোষ্টটি শেয়ার করুন। ভালো থাকুন,  ধন্যবাদ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url