একটি রোমান্টিক ছোট গল্প - বেহায়া খালাতো বোন
বিনতির ওঁই হাতে ফুলের তোড়া দেখেই মীম আমাকে ভীষণ শক্ত ভাবে জড়িয়ে ধরে আছে আর বিনতি আমার এদিকে ফুলের তোড়া নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমি একবার মীমের দিকে আরেক বার বিনতির দিকে তাকাচ্ছি ওরা দুজন আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মীমের হাতটা ছাড়াতে ইচ্ছে করছেনা মীমের বুকের দুক পুকুনির আওয়াজটা আমি একদম শুনতে পাচ্ছি। আমি মীমের হাতটা ছাড়াতে যাবো তখনি বিনতি বলে,,,,
বিনতি:- হাই তোমরা কেমন আছো?
মীম:- হ্যা ভালো আছি তুমি কেমন আছো?
বিনতি:- হ্যা আমিও ভালো আছি।
আমি:- বিনতি আসো এখানে বসো, মীমকে ছারিয়ে আমি বসেছি সাথে বিনতি আর মীম দুজনে বসেছে। মীম চেহারাটা কালো করে রাখছে। বিনতি তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে। মীম তুমি একটু এখানে বসো আমি বিনতির সাথে কথা বলে আসতেছি।
মীম:- ঠিক আছে, মীমের দিকে তাকিয়ে দেখি মীমের চোখে পানি টলমল করতেছে।
বিনতি:- হ্যা আমারো তোমার সাথে আলাদা করে কিছু কথা আছে। মীম আপু আপনি একটু বসেন আমরা আসতেছি।
আমি:- বিনতি আসো বলে বিনতির হাত ধরে নিয়ে এসেছি। প্রায় ২০ মিনিট দুজনে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রয়েছি। বিনতি বলো কি বলবে?
বিনতি:- আমি তোমাকে অনেক ভালবেসে ফেলেছিলাম।
আমি:- কিন্ত তখনি আমাকে থামিয়ে বলে,,
বিনতি:- তবে এখন তোমাকে ভালোবাসিনা কারন মীমকে ছাড়া তুমি কাওকে মন থেকে ভালোবাসতে পারবেনা। আর আমি জানি মীম এখন তোমাকে অনেক ভালবাসে। আর তোমরা দুজন অনেক সূখে থাকবে।
আমি:- হ্যা মীম আমাকে এখন অনেক ভালবাসে। আচ্ছা বিনতি আমি তোমাকে ঐ দিন রাতে কি বলে ছিলাম তোমার মনে আছে?
বিনতি:- হ্যা মনে আছে আর আমরা কিন্তু সফল হয়েছি। আর তুমি বলে ছিলে তোমার সাথে অভিনয় করতে মীমের সামনে। আচ্ছা আমার অভিনয় কেমন লাগছে?
আমি:- হ্যা ভালো তবে একটা কথা বলার ছিলো?
বিনতি:- হ্যা বলো তার আগে তোমাকে তো শুভেচ্ছা জানাতে ভূলে গেছি। হ্যাপি মেরিড লাইফ আর মীমকে অনেক সূখে রাখবে কিন্ত।
আমি:- বিনতি এই নাও তোমার স্কলারশীপের সব কাগজ আর ভিশা। তুমি আমার কাছে এইটা চাই ছিলে ঐদিন রাতে নাও এইটা তোমাকে দিব বলে অনেক খুজেছি
বিনতি:- ধন্যবাদ তোমাকে আমাকে স্কলারশীপটা পাইয়ে দেওয়ার জন্য। তুমি জানো আমার অনেক স্বপ্ন ছিলো এইটা জন্য। এখন আমি অনেক হ্যাপি।
আমি:- আগামী ১৩ তারিখ তোমার ফ্লাইট। তবে এই সব কিছু ব্যবস্থা করেছে আমার বড় ভাইয়া। আমি ওনাকে বলতেই ওনি সব কিছু ব্যবস্থা করে দিয়েছে। বিনতি তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও প্লিজ।
বিনতি:- বন্ধুত্তের মাঝে সরি ধন্যবাদ এসব না থাকলে ভালো। আচ্ছা মীমকে কি সব কিছু বলেছো নাকী?
আমি:- না তেমন কিছুই বলিনি চলো দুজনে একটু মীমকে রাগায়। আমি আর বিনতি দুজনে হাসতে হাসতে এসেছি মীম আমাদের দেখে এগিয়ে এসে বলে,,,
মীম:- তুহিন তোমরা ভালো থেকো আমি চললাম আমার বাড়ীতে। কিছুদিন পর তোমার ডির্ভোস পেপারটা পেয়ে যাবে এবার আর কোন ভূল হবেনা।
আমি:- ও আচ্ছা এই কথা ঠিক আছে আসো তাহলে আমি তোমাকে বাড়ীতে দিয়ে আসি।
মীম:- সারাটা জীবন তো একা চলতে হবে তাহলে এইটুকু সময় তুমি সাথে গিয়ে কি হবে। তুহিন আমি জানি তুমি বিনতিকে অনেক ভালবাসো আর বিনতিও তোমাকে খুব ভালবাসে।
আমি:- আচ্ছা তুমি একা যেতে পারবে?
মীম:- হ্যা যেতে পারবো আর না পারলেও পারতে হবে। আচ্ছা তাহলে তোমরা থাকো আমি গেলাম।
আমি:- একটা কথা বলবো মীম?
মীম:- না আর কোন শান্তনা মূলক কোন কথা শুনতে চাইনা। আমি জানি তুমি কি বলবে তুমি বলবে তোমাকে ক্ষমা করে দিতে আর তোমাকে ভূলে যেতে। এখন আমি যাই তবে বিনতি তুমি অনেক ভগ্যবান। আচ্ছা আমি যাই তুহিন পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও বলে চলে যেতে ছিলো তখনি আমি মীমের হাতধরেছি।
আমি:- মীম আমার কথাটা একটু শুনবে,,?
মীম:- কোন কথা নেই হাতটা ছাড়ো আমাকে যেতে দাও।
আমি:- আই লাভ ইউ।
মীম:- বিনতিকে আই লাভ ইউ বলবে এইটা আমাকে শুনাতে হবে। তখনি মীমের হাতটা ছেড়ে বিনতির কাছ থেকে ফুলের তোরাটা নিয়েছি। এইটা দেখাবার জন্য আমাকে আটকিয়ে রাখছো?
আমি:- হ্যা এইটার জন্য বলে মীমের সামনে হাটু গেরে বসে ফুলের তুরাটা দিয়ে বলি,,, আমাকে রাতে খাটের উপর থেকে লাথি মেরে ফেলে দিবে না তো? আমার দিকে মীম তাকিয়ে কান্না করে দিয়েছে।
মীম:- সরি আমাকে ক্ষমা করে দাও বলে আমাকে জড়িয়ে ধরে গালে কপালে নাকে মুখে যেখানে সেখানে পাগলের মত কিস করে দিতেছে। বিনতি মীমের এমন কান্ড দেখে অনেক হাসতেছে আর বলতেছে আরে আপু তুহিন কে তো আপনাকে দিয়েই দিছি এত পাগল হবার কিছু নেই।
আমি:- তুমি কিন্তু বলোনি লাথি মেরে ফেলে দিবে কিনা?
মীম:- আমার কি দোষ রাতে ঘুমাবার সময় আমার হাত পা একটু বেশি নরা চরা করে। তবে তুমি চাইলে আমাকে কোল বালিশের মত জড়িয়ে ধরে ঘুমালে আমি নরা চরা করতে পারবোনা 😍
আমি:- তাহলে তাই করবো।
মীম:- বিনতি আমি জানি তুমি অনেক কষ্ট পেয়েছো তার জন্য সরি।
আমি:- বিনতির সাথে কিন্তু আমার একটা চুক্তি ছিলো।
মীম:- মানে?
বিনতি:- মানেটা আমি বলতেছি,,, বিনতি মীমকে সবটা বুঝিয়ে বলছে সবটা মীম শুনে আমাকে বলে,,,
মীম:- সত্যি আমি অনেক ভাগ্যবান তোমার মত বর পেয়েছি। তবে আম্মু আর খালামনিকে অনেক ধন্যবাদ দেওয়া দরকার।
বিনতি:- আচ্ছা তাহলে আমি এখন যাই আমার স্কলারশীপ শেষ হলে আবার দেখা হবে তোমাদের সাথে। আর তখন এসে জানি দেখি যে 🤰👨👩👦 হইছে কেমন।
আমি:- হ্যা তা হবে আচ্ছা বিনতি তুমি এখানে কার বাসায় উঠেছো?
বিনতি:- আমার হুবু বরের বাসায়!
মীম:- মানে?
আমি:- তোমার হুব বর মানে কবে বিয়ে ঠিক হয়েছে?
বিনতি:- বিয়েটা অনেক দিন ধরে ঠিক হয়ে আছে কিন্তু আমি রাজি ছিলাম না তাই। ঐ দিন কক্সবাজার থেকে আব্বু আমাকে জোর করে নিয়ে এসেছে কারন আব্বুকে তোমার ব্যপারে বলে ছিলাম। তাই ঐ দিন রাতে আমাকে নিয়ে চলে আসে। আর আমার মোবাইল নিয়ে নেয়।
আমি:- কিন্তু তুমি তো বলেছিলো তোমার মা অসুস্থ?
বিনতি:- হ্যা কারন মীমকে রেখে তুমি যদি চলে আসতে তাই। আসলে রিয়াদ হচ্ছে আমার হুবু বর ও আমার বাবার বন্ধুর ছেলে লন্ডন থাকে। আব্বু আর ওনার বুন্ধ দুজনে মিলে আমাদের বিয়ে ঠিক করে। তবে যখন আব্বু বলছে যে তুমি আর মীম দুজন দুজনকে ভালবাসো কিন্তু কোন একটা কারনে কাছে আসতে পারছোনা কিন্তু দুজনে কোনদিন আলাদা হবেনা তখনি আমি কথাটা চিন্তা করি। এরপর সিধ্যান্ত নেই। আমি রিয়াদকে বিয়ে করবো। রিয়াদ একটু এদিকে আসবে বলে পাশের টেবিল থেকে উঠে এসেছে। দেখতে সুন্দর আর হ্যান্ডসাম।
রিয়াদ:- হাই তুহিন তোমাদের ঘৃনা আর ভালবাসার কথা সারা রাত বিনতি আমাকে বলছে। সত্যি অনেক দারুন একটা লাভস্টোরি। আর এই যে ভাবি এখন থেকে প্রতি রাতে তুহিন ভাইয়া কে কোল বালিসের বদলে জড়ায়ে ধরে থাকবেন।
(এই কথা শুনে বিনতির হাসি আর দেখে কে। আর এই দিকে মীম লজ্জায় লাল হয়ে গেছে।)
আমি:- তবে রিয়াদ বিনতি অনেক ভালো মেয়ে ও তোমাকে অনেক সূখে রাখবে।
রিয়াদ:- ১৩ তারিখ তো আমরা লন্ডন যেতেছি ঐ খানে বিয়েটা করবো। আর হ্যা বিনতিকে আমিও অনেক সূখে রাখবো।
আমি:- ঠিক আছে তাহলে বিনতি তুমি ভালো থেকো আর রিয়াদ ওকে কিন্তু অনেক সূখে রাখবে। বিনতি আর রিয়াদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছি।
মীম:- তুহিন আমরা আবার কবে হানিমুনে যাবো?
আমি:- আর হানিমুনে যাওয়া লাগবেনা তবে এখন থেকে বাড়ীতে হানিমুন হবে। তবে তুমি কি চাকরিটা ছেড়ে দিতে পারবে?
মীম:- আমি তো পাঁচদিন হয়ছে চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। আচ্ছা তোমাকে জড়িয়ে ধরে বসবো😍?
আমি:- হাত দুইটা দাও মীম দিয়েছে আমি ওর দুইটা হাত এনে ওকে দেখিয়ে দিয়েছি এমন ভাবে জড়িয়ে ধরবে। আমি আর মীম এখন অনেক সূখে আছি মীম রোজ আমাকে কোল বালিশ মনে করে ঘুমায়। আপু আম্মু খালাম্মা আমাদের ভালোবাসা দেখে অনেক খুসি। মীম আমাকে ছাড়া বাসা থেকে একা কোথাও বের হয়না যদিও মাঝে মাঝে রাগ করতে চাই তবে আমার ভালবাসার কাছে ওর সব রাগ আর ঘৃনা পরাজিত হয়ে যাই।