বৃষ্টি বাদল দিনের কিছু মজার খাবার

বাদল দিনের খাবার দাবার। বৃষ্টির দিনগুলো অন্য রকম। সবকিছুতেই থাকে যেন মায়ার ছোঁয়া। বৃষ্টি(Rain) দেখলেই চায়ের কেটলি চুলায় বসিয়ে দেওয়া, দুপুরে খিচুড়ি(Khichuri) বা রাতের জন্য ইলিশ পোলাও। বাড়তি কোনো বাহানা লাগে না। সকাল শুরু হয় গরম চা দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে পাও ভাজি। বিকেলে পাকোড়া। রেসিপি দিয়েছেন সেলিনা আক্তার।


ইলিশ পোলাও

উপকরণ: পোলাওয়ের চাল ৪ কাপ, ইলিশ(Hilsa) মাছের টুকরা ১২টা, ইলিশের স্টক ৮ কাপ (মাথা ও লেজ দিয়ে আলাদা করে জ্বাল দিলেই স্টক হবে), নারকেলের ঘন দুধ ১ কাপ, পেঁয়াজ(Onion) বেরেস্তা আধা কাপ কাপ, পেঁয়াজবাটা আধা কাপ, মরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ, ধনেগুঁড়া আধা চা-চামচ, কাঁচা মরিচবাটা ১ টেবিল চামচ, তেল আধা কাপ, আস্ত কাঁচা মরিচ(Green pepper) ইচ্ছামতো, লবণ পরিমাণমতো।

প্রণালি: ১২ কাপ পানিতে ইলিশ মাছের মাথা ও লেজ, একটু পেঁয়াজবাটা ও লবণ(Salt) দিয়ে সেদ্ধ করুন। সেদ্ধ পানিটুকু ছেঁকে নিন এবং যতটুকু সম্ভব কাঁটা থেকে মাছ বেছে রাখুন। মাছ(Fish) ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। পোলাওয়ের চাল ভালো করে ধুয়ে ঝরিয়ে নিন। প্যানে তেল গরম করে পেঁয়াজবাটা, কাঁচা মরিচবাটা, মরিচগুঁড়া, ধনেগুঁড়া ও সামান্য গরম পানি দিয়ে কষিয়ে নিন। মাছগুলো সাবধানে বিছিয়ে দিয়ে একটু উল্টেপাল্টে দিন। আধা কাপ নারকেলের দুধ(Coconut milk), একটু বেরেস্তা ও আধা চা-চামচ লবণ দিয়ে ফুটিয়ে নিন। এবার ৬–৭টি কাঁচা মরিচ দিয়ে ঢেকে দিন।

মাঝারি আঁচে ১০–১৫ মিনিট রান্না করে মাছটা হয়ে গেলে কিছুটা ঝোলসহ তুলে নিন। ওই প্যানেই এবার চাল দিয়ে ভালো করে ভেজে নিন এবং ভাজা হলে স্টক দিয়ে দিন। চাল ফুটে এলে নারকেলের দুধ(Coconut milk) দিন। এবার পোলাও হয়ে এলেই রান্না করা ইলিশ(Hilsa) ঝোলসহ প্যানের ভাতের ওপরে বিছিয়ে দিন এবং তার ওপরে বেরেস্তা ছড়িয়ে ঢেকে দিন। এবার তাওয়ার ওপরে দমে রেখে দিন ১০ মিনিট। সাবধানে পরিবেশন পাত্রে ওঠাতে হবে যেন মাছের টুকরা ভেঙে না যায়। নামিয়ে গরম-গরম পরিবেশন করুন।

মুচমুচে সবজি আর বিন্নি চালের নরম খিচুড়ি

উপকরণ: বিন্নি চাল ২ কাপ, মসুর ডাল আধা কাপ, মুগ ডাল সেদ্ধ সিকি কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুন(Garlic) বাটা আধা চা-চামচ, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, মরিচগুঁড়া আধা চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ৪–৫টি, এলাচি ৩ টি, দারুচিনি ২ টুকরা, তেল সিকি কাপ, লবণ স্বাদমতো, টমেটো(Tomato) কুচি আধা কাপ, গরম পানি ৫ কাপ।

বাগারের জন্য উপকরণ: ঘি ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজকুচি ৩ টেবিল চামচ, আদা(Ginger) কুচি ১ টেবিল চামচ, শুকনা মরিচ ২ টি।

প্রণালি: বিন্নি চাল ও ডাল ২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। ২ ঘণ্টা পর চাল-ডাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। পাত্রে তেল গরম করে নিন। পেঁয়াজ ও গরমমসলা ভেজে আদা ও রসুনের বাটা দিয়ে সামান্য ভেজে নিন। টমেটোকুচি দিয়ে দিন। এবার চাল(Rice) ও ডাল দিয়ে একটু ভেজে পানি দিয়ে ঢেকে দিন। কয়েকটি কাঁচা মরিচ দিয়ে প্রথমে মাঝারি ও পরে মৃদু আঁচে রান্না করুন ৫ মিনিট। অন্য চুলায় ফ্রাই প্যানে ঘি দিয়ে দিন। শুকনা মরিচ ভেজে পেঁয়াজ(Onion) ও আদার কুচি দিয়ে ভেজে নিন। ভাজা গন্ধ বের হলে রান্না করা খিচুড়িতে ঢেলে দিয়ে ২ থেকে ৩ মিনিট ঢেকে রাখুন। নামিয়ে ভাজা সবজির সঙ্গে গরম-গরম পরিবেশন করুন।

সবজির উপকরণ: বেসন(Bason) আধা কাপ, চালের গুঁড়া ২ টেবিল চামচ, মরিচগুঁড়া আধা চা-চামচ, গরমমসলার গুঁড়া আধা চা-চামচ, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, বেকিং পাউডার(Baking powder) আধা চা-চামচ, আদাবাটা আধা চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাসৌরী মেথি ২ চা-চামচ, পানি আন্দাজমতো।

প্রণালি: একটি পাত্রে বেসন নিয়ে নিন। এর সঙ্গে একে একে চালের গুঁড়া, গরমমসলার গুঁড়া, লাল মরিচের গুঁড়া, হলুদগুঁড়া(Turmeric powder), বেকিং পাউডার, আদাবাটা, রসুনবাটা ও কাসৌরী মেথি দিয়ে একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এবার এর মধ্যে অল্প অল্প করে পানি মেশাতে থাকুন। একবারে বেশি পানি দেবেন না। অল্প অল্প করে পানি ঢালুন এবং মেশাতে থাকুন। এতে প্রতিটি উপকরণ খুব ভালো করে মিশে যাবে এবং মিশ্রণটি হালকা হবে। এতে সবজিগুলো মুচমুচে ভালো হবে। মিশ্রণটি পাঁচ মিনিটের জন্য রেখে দিন। সবজিগুলো কেটে নিন। সবজি(Vegetable) চাক চাক করে কাটা (বেগুন, আলু, ক্যাপসিকাম, বরবটি, পটোল, কাঁকরোল) পছন্দমতো। কাটা সবজিগুলো সামান্য হলুদ, মরিচগুঁড়া ও লবণ(Salt) মেখে রাখুন। চুলায় কড়াইতে তেল দিন। তেল গরম হলে সবজি একটা একটা করে মিশ্রণে ডুবিয়ে নিন। ভেজে তুলে খিচুড়ির সঙ্গে গরম-গরম পরিবেশন করুন।

তন্দুরি পনির মুরগির পাকোড়া

উপকরণ: মুরগি (মোটা কিমা) ১ কাপ, পনির (কেটে নেওয়া) ১ কাপ, পেঁয়াজের মোটা কুচি ১ কাপ, আদা(Ginger) কুচি ১ টেবিল চামচ, রসুনকুচি ১ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচের কুচি ১ টেবিল চামচ, তন্দুরি মসলা ১ টেবিল চামচ, গোলমরিচের গুঁড়া সিকি চা-চামচ, ময়দা সিকি কাপ, চালের গুঁড়া সিকি কাপ, কর্নফ্লাওয়ার ২ টেবিল চামচ, বেকিং পাউডার(Baking powder) ১ চা-চামচ, তেল ডুবো তেলে ভাজার জন্য।

প্রণালি: একটি বাটিতে তেল ছাড়া সব উপকরণ নিয়ে হালকা হাতে মেখে নিন। কড়াইতে অনেকটা তেল(Oil) গরম করতে দিন। তেল গরম হলে ছোট ছোট আকারে পাকোড়া দিয়ে ভেজে তুলুন। চায়ের সঙ্গে গরম-গরম পরিবেশন করুন।

পাও ভাজি

উপকরণ: আলু সেদ্ধ (মিহিভাবে ভর্তা করে নেওয়া) ১ কাপ, মটরশুঁটি, গাজর, ফুলকপির মিহি ভর্তা আধা কাপ, মাখন আধা কাপ, ক্যাপসিকামের কুচি ২ টেবিল চামচ, টমেটোকুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচের কুচি ১ টেবিল চামচ, আদাকুচি ১ টেবিল চামচ, রসুন(Garlic) কুচি ১ টেবিল চামচ, কাশ্মীরি মরিচগুঁড়া ২ চা-চামচ, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, পাও ভাজি মসলা ১ টেবিল চামচ, ধনেপাতাকুচি ২ টেবিল চামচ, লেবুর রস(Lemon juice) ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজকুচি বড় ১ টি, লবণ স্বাদমতো, গোল ছোট বানরুটি ৫–৬টি।

পাও ভাজি মসলার উপকরণ: ভাজা ধনেগুঁড়া ২ চা-চামচ, টালা জিরাগুঁড়া ১ চা-চামচ, আমচুর পাউডার ২ চা-চামচ, লবঙ্গ ২টি, দারুচিনি ১ টুকরা, এলাচি ২টি, কাসৌরী মেথি ১ টেবিল চামচ।

প্রণালি: প্রথমে আলু(Potato) ও সবজি সেদ্ধ করে নিন। আলু আধভাঙা করে নিন। অন্যান্য সবজিও হালকা ভর্তা করে নিন। এবার ব্লেন্ডারে পাও ভাজি মসলার সব উপকরণ ব্লেন্ড করে নিন। কড়াইতে মাখন দিন। আদা ও রসুনের কুচি দিন। একটু ভেজে এতে পেঁয়াজকুচি দিন। পেঁয়াজ(Onion) নরম হলে একে একে ক্যাপসিকামের কুচি ও টমেটোকুচি দিন ।

মরিচগুঁড়া, হলুদগুঁড়া ও পাও ভাজি মসলা দিয়ে দিন। একটু কষিয়ে নিন এবং ভর্তা করা সবজি ও আলু দিয়ে দিন। আঁচ কম করে নাড়তে থাকুন। যেন তলায় ধরে না যায়। সবজি মাখা মাখা হয়ে গেলে ওপরে লেবুর রস(Lemon juice) ও ধনেপাতা ছড়িয়ে দিন এবং ভাজি নামিয়ে নিন। একটি ছড়ানো প্যানে মাখন দিন। এবার বানগুলো মাঝখানে স্লাইস করে মাখনে একদম হালকা আঁচে ভেজে নিন হালকা মচমচে করে। এবার টোস্ট করা বানের ভেতরে ভাজি দিয়ে বার্গারের মতো পরিবেশন করতে পারেন। আলাদা ভাজির সঙ্গে গরম-গরম পরিবেশন করতে পারেন পাও ভাজি।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url