চুল আগা ফাটা রোধে ঘরোয়া ৬টি উপায় জেনে নিন

চুল তার কবেকার, অন্ধকার বিদিশার নিশা, মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য’। কবি জীবনান্দ দাশের বিখ্যাত কবিতা ‘বনলতা সেন’- এ বর্ণনা করেছেন প্রিয়তমার কুন্তলের সৌন্দর্য্য। চুলের হরেক রকমের বাহারি সাজ যে মানুষের সৌন্দর্য্য কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়, কবি তাই বুঝিয়েছেন। বিশেষ করে যে নারীর চুল(Hair) যত সুন্দর, তার সৌন্দর্যও ততো বেশি।

আর কথায় আছে, নারীরা সব কাজ ভুলে গেলেও চুলের পরিচর্যা করতে ভুলেন না। কিন্তু পরিচর্যা করার পরও যদি চুল(Hair) সুন্দর না থাকে তাহলে কেমনটা লাগে! চুলে খুসকি, চুল পড়া(Hair fall), চুল ফাটা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিলেই মনটা খারাপ হয়ে যায়।

সবচেয়ে বেশি সমস্যা চুল ফাটা নিয়ে। চুলের অন্য সমস্যা সমাধান করা যায় কিন্তু চুল ফাটার সমস্যা রোধ করতে অনেক ঝামেলা। চুল ফাটা শুরু হলে আর থামতেই চায় না। তবে এর প্রধান কারণ হচ্ছে চুলের পুষ্টির অভাব। সুষম খাদ্য না খাওয়া, অতিরিক্ত পানি(Water) পান না করা, সঠিক সময়ে চুলের ডগা না কাটা এই সব একধিক কারণে চুল ফেটে যায়। চুলের এই সব সমস্যা সমাধানের জন্য যদি পুষ্টিকর(Nutritious) খাবার খাওয়া যায় এবং ঘরে বানানো কিছু প্যাক ব্যবহার করা যায় তবে এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

পাঠক আপনাদের জন্য আজকে থাকছে এমনই কিছু রেসিপি, যা দিয়ে আপনার চুলকে রক্ষা করতে পারবেন আগা ফাটা থেকে।

১) কলা
প্রথমেই চুলের পুষ্টির জন্য কলার কথা বলব। কেননা কলাতে রয়েছে পটাশিয়াম(Potassium), জিঙ্ক, আয়রন, ভিটামিন সি, এ এবং ই। যা চুলের ময়েশ্চারাইজা়র ধরে রাখে এবং চুলের ডগা ফাটা রোধ করে। তাই নিয়মিত কলা খাওয়া অত্যন্ত জরুরী। এছাড়া একটি পাকা কলা, দুই চামচ টক দই, এক চামচ গোলাপজল ও আধা চামচ লেবুর রস(Lemon juice) দিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। প্যাকটি চুলে লাগান। এক ঘণ্টা পর ভালো করে শ্যাম্পু(Shampoo) করে নিন। দেখবেন চুল ফাটা কমে যাবে।

২) ডিম
চুলের পুষ্টি যোগাতে প্রতিদিন একটি করে ডিম খাওয়া প্রয়োজন। এছাড়া একটি ডিমের সঙ্গে তিন চামচ আমন্ড অয়েল(Almond Oil) অথবা অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। অলিভ অয়েলে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট চুলের আগা ফাটা রোধ করতে সাহায্য করে। এর সঙ্গে এক চামচ মধু(Honey) ভালো করে মিশিয়ে একটি প্যাক বানিয়ে নিন। মিশ্রণটি হেয়ার মাস্কের মতো মাথায় লাগান। এক ঘন্টা পর ধুয়ে ফেলুন। উপকার হবে।

৩) পেঁপে
পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন(Protein) আছে। যা চুলে পুষ্টি যোগায়। এটি চুলের ডগা ফাটা রোধ করার পাশাপাশি চুলকে মসৃণ ও নরম করে তোলে। একটি পেঁপে ব্লেন্ড করে নিন। এবার এর সঙ্গে আধা কাপ টক দই(Sour yogurt) মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে নিন। এই প্যাকটি চুলে লাগিয়ে আধা ঘন্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।

৪) মধু
মধু ত্বক ও চুলের জন্য খুব উপকারী। এক চামচ মধুর সঙ্গে সামান্য টক দই মিশিয়ে চুলে লাগান। ২০ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যম্পু করে ফেলুন।

৫) মসুরের ডাল
মুসরের ডাল রূপচর্চা ও শরীরচর্চা উভয় কাজেই লাগে। এটি যেমন মুখের ত্বকের জন্য উপকারী তেমনই এটি মাথার ত্বকের জন্যও খুব ভালো। রাতে একটি পাত্রে খানিকটা মুসুর ডাল ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন পাটায় কিংবা ব্লেন্ড করে নিয়ে এর সঙ্গে এক চামচ মেথি গুঁড়ো ও এক কাপ টক দই(Sour yogurt) মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে এক ঘন্টা অপেক্ষা করুন। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।

৬) নারকেল তেল
চুল ফাটা রোধ করতে সবচেয়ে কার্যকরী সমাধান হলো নারকেল তেল। তেল চুলকে ময়েশ্চারাইজ(Moisturize) করতে সাহায্য করে। মাথার ত্বক ও চুলে ভালো রাখতে নিয়মিত নারকেল তেল(Coconut oil) দিয়ে ম্যাসাজ করুন। চুল যেদিন শ্যাম্পু করবেন তার আগের রাতে তেল দিয়ে নিন। পরদিন সকালে শ্যাম্পু করে নিন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url